ইসলামে স্বর্ণ ও রূপার যাকাত ফরজ হওয়ার সুস্পষ্ট দলিল রয়েছে, যা কুরআন এবং হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে। নিচে স্বর্ণ ও রূপার যাকাত ফরজ হওয়ার দলিল ও শর্তাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
কুরআনের দলিল
وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٍ. يَوْمَ يُحْمَى عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوبُهُمْ وَظُهُورُهُمْ هَـٰذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنتُمْ تَكْنِزُونَ
উচ্চারণ:
ওয়াল্লাজিনা ইয়াকনিজুনা যাহাবা ওয়ালফিজ্বাতা ওয়ালা ইউনফিকুনাহা ফি সাবিলিল্লাহি ফাবাশশিরহুম বিআযাবিন আলিম। ইয়াওমা ইয়ুহমা আলাইহা ফি নারি জাহান্নামা ফাতুকওয়া বিহা জিবাহুহুম ওয়া জুনুবুহুম ওয়া যুহুরুহুম। হাজা মা কানাজতুম লি'আনফুসিকুম ফাজুকু মা কুনতুম তাকনিজুন।"
অর্থ:
আর যারা সোনা ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও। সেদিন সেই সোনা ও রূপাকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, অতঃপর তা দিয়ে তাদের কপাল, পার্শ্ব এবং পৃষ্ঠদেশে দাগ দেওয়া হবে। বলা হবে, ‘এটাই হচ্ছে যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, এখন আস্বাদন কর যা তোমরা জমা করে রেখেছিলে।’"
[সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৩৪-৩৫]
হাদিসের দলিল (সহিহ মুসলিম)
مَا مِنْ صَاحِبِ كَنْزٍ لاَ يُؤَدِّى زَكَاتَهُ إِلاَّ أُحْمِىَ عَلَيْهِ فِى نَارِ جَهَنَّمَ فَيُجْعَلُ صَفَائِحَ فَيُكْوَى بِهَا جَنْبَاهُ وَجَبِينُهُ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَ عِبَادِهِ فِى يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ
উচ্চারণ:
মা মিন সাহিবি কানযিন লা ইউ'আদ্দি যাকাতাহু ইল্লা উহমিয়া আলাইহি ফি নারি জাহান্নামা ফাইউজ'আলু সাফায়িহা ফাইউকওয়া বিহা জানবাহু ওয়া জাবিনুহু হাত্তা ইয়াহকুমাল্লাহু বায়না ইবাদিহি ফি ইয়াউমিন কান মিকদারুহু খামসিনা আলফা সানাতিন।"
অর্থ:
যে কোনো ব্যক্তি যে ধনসম্পদ জমা করে এবং যাকাত প্রদান করে না, কিয়ামতের দিন সেই সম্পদকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে তার পার্শ্ব ও কপালে দাগ লাগানো হবে, যতক্ষণ না আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করেন।"
সুনান আবু দাউদ
عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِذَا كَانَتْ لَكَ مِائَتَا دِرْهَمٍ وَحَالَ عَلَيْهَا الْحَوْلُ ، فَفِيهَا خَمْسَةُ دَرَاهِمَ ، وَلَيْسَ عَلَيْكَ شَيْءٌ - يَعْنِي فِي الذَّهَبِ - حَتَّى يَكُونَ لَكَ عِشْرُونَ دِينَارًا ، فَإِذَا كَانَ لَكَ عِشْرُونَ دِينَارًا وَحَالَ عَلَيْهَا الْحَوْلُ ، فَفِيهَا نِصْفُ دِينَارٍ . فَمَا زَادَ ، فَبِحِسَابِ ذَلِكَ . وَلَيْسَ فِي مَالٍ زَكَاةٌ حَتَّى يَحُولَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ
উচ্চারণ:
আন আলি ইবন আবি তালিব কালা: কালা আন-নাবিয়্যু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: ইযা কানাত লাকা মি'আতা দিরহামিন ওয়া হালা আলাইহা আল হাউলু, ফাফিহা খামসাতু দারাহিমা, ওয়া লাইসা আলাইকা শাইউন - ইয়ানি ফি যাহাবি - হাত্তা ইয়াকুনা লাকা ইশরুনা দিনারান, ফা ইযা কানাত লাকা ইশরুনা দিনারান ওয়া হালা আলাইহা আল হাউলু, ফাফিহা নিছফু দিনারিন। ফা মা যায়াদা, ফা বিহিসাবি যালিক। ওয়া লাইসা ফি মালিন যাকাতুন হাত্তা ইয়াহুলা আলাইহি আল হাউলু।"
অর্থ:
আলি ইবন আবি তালিব (রাযি.) থেকে বর্ণিত: নবী (সা.) বলেছেন: 'যদি তোমার কাছে দুইশত দিরহাম থাকে এবং এর উপর এক বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে এর উপর পাঁচ দিরহাম যাকাত দিতে হবে। এবং যদি তোমার কাছে বিশ দিনার সোনা থাকে এবং এর উপর এক বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে এর উপর অর্ধ দিনার যাকাত দিতে হবে। যা বৃদ্ধি পায় তার উপরও সেই অনুপাতে যাকাত দিতে হবে। এবং কোনো সম্পদের উপর যাকাত ফরজ হয় না যতক্ষণ না এক বছর অতিবাহিত হয়।'"
স্বর্ণ ও রূপার যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত
নিসাব পরিমাণ সম্পদ
• স্বর্ণের ক্ষেত্রে নিসাব হলো ২০ মিশকাল (প্রায় ৮৫ গ্রাম)।
• রূপার ক্ষেত্রে নিসাব হলো ২০০ দিরহাম (প্রায় ৫৯৫ গ্রাম)।
এক বছর পূর্ণ হওয়া (হাওলানুল হাওল)
• সম্পদ এক বছর ধরে মালিকানাধীন থাকতে হবে। এক বছর পূর্ণ হলে যাকাত ফরজ হয়।
যাকাতের হার
• যাকাতের হার হলো ২.৫%।
উদাহরণস্বরূপ যাকাতের হিসাব
স্বর্ণের যাকাত
যদি আপনার কাছে ১০০ গ্রাম স্বর্ণ থাকে এবং এর উপর এক বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে যাকাত হবে-
• যাকাতের হার: ২.৫%
• যাকাতের পরিমাণ: ১০০ গ্রাম × ২.৫% = ২.৫ গ্রাম
রূপার যাকাত
যদি আপনার কাছে ১০০০ গ্রাম রূপা থাকে এবং এর উপর এক বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে যাকাত হবে
• যাকাতের হার: ২.৫%
• যাকাতের পরিমাণ: ১০০০ গ্রাম × ২.৫% = ২৫ গ্রাম
সারসংক্ষেপ
স্বর্ণ ও রূপার যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে এবং এক বছর পূর্ণ হলে যাকাত ফরজ হয়। যাকাতের হার হলো ২.৫%। মুসলমানদের তাদের স্বর্ণ ও রূপার যাকাত আদায় করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে এবং সমাজে অর্থনৈতিক সমতা প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখতে হবে।
ইসলামে স্বর্ণ ও রূপার নির্দিষ্ট পরিমাণের উপর যাকাত ফরজ করা হয়েছে। এটি নিসাবের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হয়, যা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ। নিচে স্বর্ণ ও রূপার উপর যাকাত ফরজ হওয়ার পরিমাণ এবং এর শর্তাবলী আলোচনা করা হলো।
স্বর্ণের যাকাত ফরজ হওয়ার পরিমাণ -
স্বর্ণের নিসাব
• ২০ মিশকাল স্বর্ণ, যা প্রায় ৮৫ গ্রাম স্বর্ণের সমান।
যাকাতের হার
• স্বর্ণের যাকাতের হার হলো ২.৫%।
এক বছর পূর্ণ হওয়া (হাওলানুল হাওল)
• স্বর্ণের মালিকানা এক বছর পূর্ণ হলে যাকাত ফরজ হয়।
উদাহরণ
৮৫ গ্রাম বা তার বেশি স্বর্ণ
• যদি আপনার কাছে ১০০ গ্রাম স্বর্ণ থাকে এবং এটি এক বছর ধরে আপনার মালিকানায় থাকে, তাহলে যাকাত আদায় করতে হবে:
• যাকাতের পরিমাণ: ১০০ গ্রাম × ২.৫% = ২.৫ গ্রাম স্বর্ণ
রূপার যাকাত ফরজ হওয়ার পরিমাণ
রূপার নিসাব
• ২০০ দিরহাম রূপা, যা প্রায় ৫৯৫ গ্রাম রূপার সমান।
যাকাতের হার
• রূপার যাকাতের হার হলো ২.৫%।
এক বছর পূর্ণ হওয়া (হাওলানুল হাওল) -
• রূপার মালিকানা এক বছর পূর্ণ হলে যাকাত ফরজ হয়।
উদাহরণ
৫৯৫ গ্রাম বা তার বেশি রূপা, যদি আপনার কাছে ১০০০ গ্রাম রূপা থাকে এবং এটি এক বছর ধরে আপনার মালিকানায় থাকে,
তাহলে যাকাত আদায় করতে হবে
• যাকাতের পরিমাণ: ১০০০ গ্রাম × ২.৫% = ২৫ গ্রাম রূপা
কুরআনের দলিল
وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٍ. يَوْمَ يُحْمَى عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوبُهُمْ وَظُهُورُهُمْ هَـٰذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنتُمْ تَكْنِزُونَ
উচ্চারণ:
ওয়াল্লাজিনা ইয়াকনিজুনা যাহাবা ওয়ালফিজ্বাতা ওয়ালা ইউনফিকুনাহা ফি সাবিলিল্লাহি ফাবাশশিরহুম বিআযাবিন আলিম। ইয়াওমা ইয়ুহমা আলাইহা ফি নারি জাহান্নামা ফাতুকওয়া বিহা জিবাহুহুম ওয়া জুনুবুহুম ওয়া যুহুরুহুম। হাজা মা কানাজতুম লি'আনফুসিকুম ফাজুকু মা কুনতুম তাকনিজুন।
অর্থ:
আর যারা সোনা ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও। সেদিন সেই সোনা ও রূপাকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, অতঃপর তা দিয়ে তাদের কপাল, পার্শ্ব এবং পৃষ্ঠদেশে দাগ দেওয়া হবে। বলা হবে, ‘এটাই হচ্ছে যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, এখন আস্বাদন কর যা তোমরা জমা করে রেখেছিলে।
[সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৩৪-৩৫]
হাদিসের দলিল (সহিহ মুসলিম)
مَا مِنْ صَاحِبِ كَنْزٍ لاَ يُؤَدِّى زَكَاتَهُ إِلاَّ أُحْمِىَ عَلَيْهِ فِى نَارِ جَهَنَّمَ فَيُجْعَلُ صَفَائِحَ فَيُكْوَى بِهَا جَنْبَاهُ وَجَبِينُهُ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَ عِبَادِهِ فِى يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ
উচ্চারণ:
মা মিন সাহিবি কানযিন লা ইউ'আদ্দি যাকাতাহু ইল্লা উহমিয়া আলাইহি ফি নারি জাহান্নামা ফাইউজ'আলু সাফায়িহা ফাইউকওয়া বিহা জানবাহু ওয়া জাবিনুহু হাত্তা ইয়াহকুমাল্লাহু বায়না ইবাদিহি ফি ইয়াউমিন কান মিকদারুহু খামসিনা আলফা সানাতিন।
অর্থ:
যে কোনো ব্যক্তি যে ধনসম্পদ জমা করে এবং যাকাত প্রদান করে না, কিয়ামতের দিন সেই সম্পদকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে তার পার্শ্ব ও কপালে দাগ লাগানো হবে, যতক্ষণ না আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করেন।
সারসংক্ষেপ
স্বর্ণ ও রূপার যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে, যা স্বর্ণের ক্ষেত্রে ৮৫ গ্রাম এবং রূপার ক্ষেত্রে ৫৯৫ গ্রাম। এই সম্পদ এক বছর ধরে মালিকানাধীন থাকলে এবং যাকাতের হার ২.৫% হওয়া শর্তে যাকাত আদায় করতে হবে। কুরআন ও হাদিসে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
ইসলামে যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য স্বর্ণ ও রূপার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ নিসাব হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে। নিচে স্বর্ণ ও রূপার নিসাব এবং যাকাতের হার সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হলো।
স্বর্ণের নিসাব -
স্বর্ণের পরিমাণ -
• স্বর্ণের নিসাব হলো ২০ মিশকাল, যা প্রায় ৮৫ গ্রাম স্বর্ণের সমান।
যাকাতের হার -
• স্বর্ণের যাকাতের হার হলো ২.৫%।
রূপার নিসাব -
রূপার পরিমাণ -
• রূপার নিসাব হলো ২০০ দিরহাম, যা প্রায় ৫৯৫ গ্রাম রূপার সমান।
যাকাতের হার -
• রূপার যাকাতের হার হলো ২.৫%।
সারসংক্ষেপ -
স্বর্ণ ও রূপার যাকাত ফরজ হওয়ার জন্য স্বর্ণের ক্ষেত্রে ৮৫ গ্রাম এবং রূপার ক্ষেত্রে ৫৯৫ গ্রাম নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে। এই সম্পদ এক বছর ধরে মালিকানাধীন থাকলে এবং যাকাতের হার ২.৫% হওয়া শর্তে যাকাত আদায় করতে হবে। কুরআন ও হাদিসে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
স্বর্ণ এবং রূপা উভয় মিলিয়ে যাকাত ফরজ হওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামে নির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। যদি কারো কাছে স্বর্ণ এবং রূপা উভয়ই থাকে, তবে দুটি ধাতুর মোট মূল্য হিসাব করে নিসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ হলে যাকাত ফরজ হবে।
যাকাত ফরজ হওয়ার শর্তাবলী
নিসাব পরিমাণ সম্পদ
· স্বর্ণের ক্ষেত্রে নিসাব হলো ৮৫ গ্রাম।
· রূপার ক্ষেত্রে নিসাব হলো ৫৯৫ গ্রাম।
· যদি স্বর্ণ এবং রূপার মোট মূল্য এই নিসাব পরিমাণের সমান বা বেশি হয়, তবে যাকাত ফরজ হবে।
এক বছর পূর্ণ হওয়া (হাওলানুল হাওল)
· সম্পদ এক বছর ধরে মালিকানাধীন থাকতে হবে।
যাকাতের হার
· যাকাতের হার হলো ২.৫%।
উদাহরণস্বরূপ যাকাতের হিসাব
ধাপে ধাপে যাকাতের হিসাব, স্বর্ণ এবং রূপার মূল্য নির্ধারণ
· স্বর্ণ এবং রূপার বর্তমান বাজার মূল্য নির্ধারণ করুন।
· উদাহরণস্বরূপ, আপনার কাছে ৫০ গ্রাম স্বর্ণ এবং ৩০০ গ্রাম রূপা আছে।
· ৫০ গ্রাম স্বর্ণের মূল্য: (ধরা যাক) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য ৬০০০ টাকা হলে, ৫০ গ্রাম স্বর্ণের মূল্য হবে ৫০ × ৬০০০ = ৩,০০,০০০ টাকা।
· ৩০০ গ্রাম রূপার মূল্য: (ধরা যাক) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য ৮০ টাকা হলে, ৩০০ গ্রাম রূপার মূল্য হবে ৩০০ × ৮০ = ২৪,০০০ টাকা।
মোট সম্পদের মূল্য নির্ধারণ
· স্বর্ণ এবং রূপার মোট মূল্য নির্ধারণ করুন:
· মোট মূল্য: ৩,০০,০০০ টাকা + ২৪,০০০ টাকা = ৩,২৪,০০০ টাকা।
নিসাব পরিমাণ সম্পদ নির্ধারণ
· নিসাব পরিমাণ সম্পদ: ৫৯৫ গ্রাম রূপার সমমূল্য বা ৮৫ গ্রাম স্বর্ণের সমমূল্য।
· ৫৯৫ গ্রাম রূপার বর্তমান মূল্য: ৫৯৫ × ৮০ = ৪৭,৬০০ টাকা।
যাকাতের হিসাব
· যাকাতের পরিমাণ: ৩,২৪,০০০ টাকা × ২.৫% = ৮,১০০ টাকা।
وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٍ. يَوْمَ يُحْمَى عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوبُهُمْ وَظُهُورُهُمْ هَـٰذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنتُمْ تَكْنِزُونَ
উচ্চারণ:
ওয়াল্লাজিনা ইয়াকনিজুনা যাহাবা ওয়ালফিজ্বাতা ওয়ালা ইউনফিকুনাহা ফি সাবিলিল্লাহি ফাবাশশিরহুম বিআযাবিন আলিম। ইয়াওমা ইয়ুহমা আলাইহা ফি নারি জাহান্নামা ফাতুকওয়া বিহা জিবাহুহুম ওয়া জুনুবুহুম ওয়া যুহুরুহুম। হাজা মা কানাজতুম লি'আনফুসিকুম ফাজুকু মা কুনতুম তাকনিজুন।"
অর্থ:
আর যারা সোনা ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও। সেদিন সেই সোনা ও রূপাকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, অতঃপর তা দিয়ে তাদের কপাল, পার্শ্ব এবং পৃষ্ঠদেশে দাগ দেওয়া হবে। বলা হবে, ‘এটাই হচ্ছে যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, এখন আস্বাদন কর যা তোমরা জমা করে রেখেছিলে।’"
[সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৩৪-৩৫]
হাদিসের দলিল -
مَا مِنْ صَاحِبِ كَنْزٍ لاَ يُؤَدِّى زَكَاتَهُ إِلاَّ أُحْمِىَ عَلَيْهِ فِى نَارِ جَهَنَّمَ فَيُجْعَلُ صَفَائِحَ فَيُكْوَى بِهَا جَنْبَاهُ وَجَبِينُهُ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَ عِبَادِهِ فِى يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ
উচ্চারণ:
মা মিন সাহিবি কানযিন লা ইউ'আদ্দি যাকাতাহু ইল্লা উহমিয়া আলাইহি ফি নারি জাহান্নামা ফাইউজ'আলু সাফায়িহা ফাইউকওয়া বিহা জানবাহু ওয়া জাবিনুহু হাত্তা ইয়াহকুমাল্লাহু বায়না ইবাদিহি ফি ইয়াউমিন কান মিকদারুহু খামসিনা আলফা সানাতিন।"
অর্থ:
যে কোনো ব্যক্তি যে ধনসম্পদ জমা করে এবং যাকাত প্রদান করে না, কিয়ামতের দিন সেই সম্পদকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে তার পার্শ্ব ও কপালে দাগ লাগানো হবে, যতক্ষণ না আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করেন।"
[সহিহ মুসলিম]
عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِذَا كَانَتْ لَكَ مِائَتَا دِرْهَمٍ وَحَالَ عَلَيْهَا الْحَوْلُ ، فَفِيهَا خَمْسَةُ دَرَاهِمَ ، وَلَيْسَ عَلَيْكَ شَيْءٌ - يَعْنِي فِي الذَّهَبِ - حَتَّى يَكُونَ لَكَ عِشْرُونَ دِينَارًا ، فَإِذَا كَانَ لَكَ عِشْرُونَ دِينَارًا وَحَالَ عَلَيْهَا الْحَوْلُ ، فَفِيهَا نِصْفُ دِينَارٍ . فَمَا زَادَ ، فَبِحِسَابِ ذَلِكَ . وَلَيْسَ فِي مَالٍ زَكَاةٌ حَتَّى يَحُولَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ
উচ্চারণ:
আন আলি ইবন আবি তালিব কালা: কালা আন-নাবিয়্যু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: ইযা কানাত লাকা মি'আতা দিরহামিন ওয়া হালা আলাইহা আল হাউলু, ফাফিহা খামসাতু দারাহিমা, ওয়া লাইসা আলাইকা শাইউন - ইয়ানি ফি যাহাবি - হাত্তা ইয়াকুনা লাকা ইশরুনা দিনারান, ফা ইযা কানাত লাকা ইশরুনা দিনারান ওয়া হালা আলাইহা আল হাউলু, ফাফিহা নিছফু দিনারিন। ফা মা যায়াদা, ফা বিহিসাবি যালিক। ওয়া লাইসা ফি মালিন যাকাতুন হাত্তা ইয়াহুলা আলাইহি আল হাউলু।
অর্থ:
আলি ইবন আবি তালিব (রাযি.) থেকে বর্ণিত: নবী (সা.) বলেছেন: 'যদি তোমার কাছে দুইশত দিরহাম থাকে এবং এর উপর এক বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে এর উপর পাঁচ দিরহাম যাকাত দিতে হবে। এবং যদি তোমার কাছে বিশ দিনার সোনা থাকে এবং এর উপর এক বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে এর উপর অর্ধ দিনার যাকাত দিতে হবে। যা বৃদ্ধি পায় তার উপরও সেই অনুপাতে যাকাত দিতে হবে। এবং কোনো সম্পদের উপর যাকাত ফরজ হয় না যতক্ষণ না এক বছর অতিবাহিত হয়।
[সুনান আবু দাউদ]
সারসংক্ষেপ
স্বর্ণ এবং রূপার যাকাত নির্ধারণের জন্য উভয় ধাতুর মোট মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। যদি মোট মূল্য নিসাব পরিমাণে পৌঁছে এবং এক বছর ধরে মালিকানাধীন থাকে, তবে ২.৫% যাকাত ফরজ হবে। কুরআন ও হাদিসে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
ইসলামী শরিয়তে ব্যবহৃত অলংকারের উপর যাকাত আদায়ের বিধান সম্পর্কে কিছু ভিন্ন মতামত রয়েছে। কিছু ফিকহ অনুসারে ব্যবহৃত অলংকারের উপর যাকাত ফরজ নয়, আবার কিছু ফিকহ মতে ফরজ। এখানে প্রধান প্রধান মতামত এবং দলিলগুলো আলোচনা করা হলো।
ব্যবহৃত অলংকারের যাকাতের বিধান
মতামত ১: ব্যবহৃত অলংকারের উপর যাকাত ফরজ নয় -
কিছু ইসলামী আইনবিদদের মতে, ব্যবহারের জন্য রাখা অলংকারের উপর যাকাত ফরজ নয়। এই মতামত অনুসারে, অলংকার ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য থাকলে তা যাকাতের আওতায় পড়ে না।
দলিল -
• রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সময়ে কিছু মহিলাদের স্বর্ণের গহনা ছিল এবং তাদেরকে যাকাত দিতে বলা হয়নি।
মতামত ২: ব্যবহৃত অলংকারের উপর যাকাত ফরজ -
কিছু ইসলামী আইনবিদদের মতে, ব্যবহারের জন্য রাখা হলেও যদি অলংকারের পরিমাণ নিসাব পরিমাণ হয়, তাহলে তার উপর যাকাত ফরজ হয়। এই মতামত অনুসারে, ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য রাখা অলংকারও যাকাতের আওতায় পড়ে।
কুরআনের দলিল -
وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُم بِعَذَابٍ أَلِيمٍ. يَوْمَ يُحْمَى عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوبُهُمْ وَظُهُورُهُمْ هَـٰذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنتُمْ تَكْنِزُونَ
উচ্চারণ:
ওয়াল্লাজিনা ইয়াকনিজুনা যাহাবা ওয়ালফিজ্বাতা ওয়ালা ইউনফিকুনাহা ফি সাবিলিল্লাহি ফাবাশশিরহুম বিআযাবিন আলিম। ইয়াওমা ইয়ুহমা আলাইহা ফি নারি জাহান্নামা ফাতুকওয়া বিহা জিবাহুহুম ওয়া জুনুবুহুম ওয়া যুহুরুহুম। হাজা মা কানাজতুম লি'আনফুসিকুম ফাজুকু মা কুনতুম তাকনিজুন।"
অর্থ:
আর যারা সোনা ও রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না, তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও। সেদিন সেই সোনা ও রূপাকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে, অতঃপর তা দিয়ে তাদের কপাল, পার্শ্ব এবং পৃষ্ঠদেশে দাগ দেওয়া হবে। বলা হবে, ‘এটাই হচ্ছে যা তোমরা নিজেদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, এখন আস্বাদন কর যা তোমরা জমা করে রেখেছিলে।’"
[সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৩৪-৩৫]
হাদিসের দলিল (সহিহ মুসলিম)
مَا مِنْ صَاحِبِ كَنْزٍ لاَ يُؤَدِّى زَكَاتَهُ إِلاَّ أُحْمِىَ عَلَيْهِ فِى نَارِ جَهَنَّمَ فَيُجْعَلُ صَفَائِحَ فَيُكْوَى بِهَا جَنْبَاهُ وَجَبِينُهُ حَتَّى يَحْكُمَ اللَّهُ بَيْنَ عِبَادِهِ فِى يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ
উচ্চারণ:
মা মিন সাহিবি কানযিন লা ইউ'আদ্দি যাকাতাহু ইল্লা উহমিয়া আলাইহি ফি নারি জাহান্নামা ফাইউজ'আলু সাফায়িহা ফাইউকওয়া বিহা জানবাহু ওয়া জাবিনুহু হাত্তা ইয়াহকুমাল্লাহু বায়না ইবাদিহি ফি ইয়াউমিন কান মিকদারুহু খামসিনা আলফা সানাতিন।"
অর্থ:
যে কোনো ব্যক্তি যে ধনসম্পদ জমা করে এবং যাকাত প্রদান করে না, কিয়ামতের দিন সেই সম্পদকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করা হবে এবং তা দিয়ে তার পার্শ্ব ও কপালে দাগ লাগানো হবে, যতক্ষণ না আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করেন।"
সুনান আবু দাউদ
عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ : قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِذَا كَانَتْ لَكَ مِائَتَا دِرْهَمٍ وَحَالَ عَلَيْهَا الْحَوْلُ ، فَفِيهَا خَمْسَةُ دَرَاهِمَ ، وَلَيْسَ عَلَيْكَ شَيْءٌ - يَعْنِي فِي الذَّهَبِ - حَتَّى يَكُونَ لَكَ عِشْرُونَ دِينَارًا ، فَإِذَا كَانَ لَكَ عِشْرُونَ دِينَارًا وَحَالَ عَلَيْهَا الْحَوْلُ ، فَفِيهَا نِصْفُ دِينَارٍ . فَمَا زَادَ ، فَبِحِسَابِ ذَلِكَ . وَلَيْسَ فِي مَالٍ زَكَاةٌ حَتَّى يَحُولَ عَلَيْهِ الْحَوْلُ
উচ্চারণ:
আন আলি ইবন আবি তালিব কালা: কালা আন-নাবিয়্যু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম: ইযা কানাত লাকা মি'আতা দিরহামিন ওয়া হালা আলাইহা আল হাউলু, ফাফিহা খামসাতু দারাহিমা, ওয়া লাইসা আলাইকা শাইউন - ইয়ানি ফি যাহাবি - হাত্তা ইয়াকুনা লাকা ইশরুনা দিনারান, ফা ইযা কানাত লাকা ইশরুনা দিনারান ওয়া হালা আলাইহা আল হাউলু, ফাফিহা নিছফু দিনারিন। ফা মা যায়াদা, ফা বিহিসাবি যালিক। ওয়া লাইসা ফি মালিন যাকাতুন হাত্তা ইয়াহুলা আলাইহি আল হাউলু।"
অর্থ:
আলি ইবন আবি তালিব (রাযি.) থেকে বর্ণিত: নবী (সা.) বলেছেন: 'যদি তোমার কাছে দুইশত দিরহাম থাকে এবং এর উপর এক বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে এর উপর পাঁচ দিরহাম যাকাত দিতে হবে। এবং যদি তোমার কাছে বিশ দিনার সোনা থাকে এবং এর উপর এক বছর অতিবাহিত হয়, তাহলে এর উপর অর্ধ দিনার যাকাত দিতে হবে। যা বৃদ্ধি পায় তার উপরও সেই অনুপাতে যাকাত দিতে হবে। এবং কোনো সম্পদের উপর যাকাত ফরজ হয় না যতক্ষণ না এক বছর অতিবাহিত হয়।'
যাকাতের হিসাবের উদাহরণ
স্বর্ণের নিসাব
• ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ।
• যদি আপনার কাছে ১০০ গ্রাম স্বর্ণ থাকে, তাহলে যাকাত হবে: ১০০ × ২.৫% = ২.৫ গ্রাম স্বর্ণ।
রূপার নিসাব
• ৫৯৫ গ্রাম রূপা।
• যদি আপনার কাছে ১০০০ গ্রাম রূপা থাকে, তাহলে যাকাত হবে: ১০০০ × ২.৫% = ২৫ গ্রাম রূপা।
সারসংক্ষেপ
ব্যবহৃত অলংকারের যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন মতামত রয়েছে। তবে, যদি ব্যবহৃত অলংকারের পরিমাণ নিসাব পরিমাণে পৌঁছে এবং এক বছর পূর্ণ হয়, তাহলে যাকাত আদায় করা উচিৎ। যাকাতের হার হলো ২.৫%। ইসলামে এই বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে এবং যাকাত আদায় করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।