যাকাতুল ফিতর ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ দায়িত্ব, যা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমকে রমজান মাসের শেষে ঈদুল ফিতরের আগে প্রদান করতে হয়। কুরআন ও হাদিসে যাকাতুল ফিতরের ফরজ হওয়ার দলিল উল্লেখ করা হয়েছে। নিচে কুরআন ও হাদিসের কিছু প্রমাণ প্রদান করা হলো -
যাকাতুল ফিতর সরাসরি কুরআনে উল্লেখ না থাকলেও, সাধারণভাবে দানের গুরুত্ব এবং এর বিধান সম্পর্কে কুরআনে বেশ কিছু আয়াত রয়েছে।
কুরআনের আদেশ
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ إِنَّ صَلَاتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
উচ্চারণ:
খুজ্ মিন আমওয়ালিহিম সাদাকাতান তুতাহিরুহুম ওয়া তুজাক্কিহিম বিহা ওয়াসাল্লি আলাইহিম ইন্না সালাতাকা সাকানুল্লাহুম। ওয়াল্লাহু সামীউন আলীম।"
অর্থ:
তাদের ধন-সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করো, এর মাধ্যমে তুমি তাদেরকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে এবং তাদের জন্য দোয়া করো। নিঃসন্দেহে তোমার দোয়া তাদের জন্য প্রশান্তি। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।"
[সূরা আত-তাওবা, আয়াত ১০৩]
হাদিসের নির্দেশনা -
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাকাতুল ফিতরকে ফরজ করেছেন। এতে কোনো সন্দেহ নেই এবং এ বিষয়ে বহু হাদিস পাওয়া যায়। নিচে কিছু উল্লেখযোগ্য হাদিস প্রদান করা হলো –
فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ، وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ، مَنْ أَدَّاهَا قَبْلَ الصَّلَاةِ فَهِيَ زَكَاةٌ مَقْبُولَةٌ، وَمَنْ أَدَّاهَا بَعْدَ الصَّلَاةِ فَهِيَ صَدَقَةٌ مِنَ الصَّدَقَا
উচ্চারণ:
ফারাদা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকাতাল ফিতরি তুহরাতান লিসসায়িমি মিনাল লাঘবি ওয়াররাফাসি ওয়া তু'মাতান লিল মাসাকিন। মান আদ্দাহা কাবলাস সালাতি ফাহিয়া যাকাতুন মাকবুলাতুন, ওয়ামান আদ্দাহা বাদাস সালাতি ফাহিয়া সাদাকাতুন মিনাস সাদাকাত।
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতরকে ফরজ করেছেন, যা রোজাদারদের অশালীন কথা ও কাজ থেকে পবিত্র করে এবং দরিদ্রদের খাবারের জন্য। যে ব্যক্তি ঈদের নামাজের আগে যাকাতুল ফিতর প্রদান করে, তা যাকাত হিসেবে গ্রহণযোগ্য হয়, আর যে ব্যক্তি নামাজের পরে প্রদান করে, তা সাধারণ সদকা হিসেবে গণ্য হবে।
[আবু দাউদ, ইবন মাজাহ]
أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِزَكَاةِ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، عَلَى الْعَبْدِ وَالْحُرِّ، وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثَى، وَالصَّغِيرِ وَالْكَبِيرِ مِنَ الْمُسْلِمِينَ، وَأَمَرَ بِهَا أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلَاةِ
উচ্চারণ:
আমারা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামি বিজাকাতিল ফিতরি সা'আন মিন তামরিন, আও সা'আন মিন শা'ইরিন, আলাল আবদি ওয়াল হুররি, ওয়াল যাকারি ওয়াল উনথা, ওয়াল সগিরি ওয়াল কাবিরি মিনাল মুসলিমিন, ওয়া আমারা বিহা আন তু'আদ্দা কাবলা খুরুজিন নাসি ইলাস সালাহ।"
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতরকে নির্ধারণ করেছেন এক সা' (প্রায় ২.৫ কেজি) খেজুর বা এক সা' যব, প্রত্যেক দাস, স্বাধীন, পুরুষ, মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ মুসলমানের উপর। এবং তিনি আদেশ দিয়েছেন এটি ঈদের নামাজের জন্য বের হওয়ার আগে প্রদান করতে।
[সহিহ বুখারি ও মুসলিম]
সারসংক্ষেপ
যাকাতুল ফিতর ফরজ হওয়ার প্রমাণ কুরআন ও হাদিসে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত হয়েছে। এটি প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য ফরজ এবং ঈদুল ফিতরের আগে দরিদ্র ও অভাবী মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়। যাকাতুল ফিতর প্রদান করে মুসলমানরা তাদের রোজার সময়ে ঘটে যাওয়া ছোটখাট ভুলত্রুটি সংশোধন করতে পারে এবং ঈদের আনন্দে সকলকে শরিক করতে পারে।
যাকাতুল ফিতর ফরজ হওয়ার জন্য একজন মুসলমানের উপর কিছু নির্দিষ্ট শর্ত আরোপিত হয়েছে। এ শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সম্পদের পরিমাণ। নিচে যাকাতুল ফিতর ফরজ হওয়ার জন্য সম্পদের মালিক হওয়ার শর্তসমূহ উল্লেখ করা হলো
প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ
• যাকাতুল ফিতর ফরজ হওয়ার জন্য একজন মুসলমানের নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে, যা তার এবং তার পরিবারের মৌলিক চাহিদা পূরণের পর বেঁচে থাকে। এই মৌলিক চাহিদার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এবং চিকিৎসা।
নেসাবের পরিমাণ
• নেসাব হলো একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ যা ইসলামে দান, যাকাত এবং যাকাতুল ফিতর ফরজ হওয়ার জন্য নির্ধারিত হয়েছে। যাকাতুল ফিতরের ক্ষেত্রে নেসাব হলো ৫৭৭.৫ গ্রাম রূপা বা তার সমমূল্যের সম্পদ।
• যদি কোনো ব্যক্তির কাছে মৌলিক চাহিদা পূরণের পর এত পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাহলে তার উপর যাকাতুল ফিতর ফরজ হবে।
উদাহরণ -
মৌলিক চাহিদা পূরণের পর সম্পদ নির্ধারণ
• আপনার কাছে যদি মৌলিক চাহিদা পূরণের পর ৫৭৭.৫ গ্রাম রূপা বা তার সমমূল্যের সম্পদ থাকে, তাহলে আপনি যাকাতুল ফিতর প্রদানে বাধ্য।
যাকাতুল ফিতর প্রদানের পরিমাণ
• প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির জন্য যাকাতুল ফিতরের পরিমাণ হলো এক সা' (প্রায় ২.৫ কেজি) খাদ্য সামগ্রী বা এর সমমূল্যের টাকা।
কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা -
হাদিসের প্রমাণ:
فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ، وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ
উচ্চারণ:
ফারাদা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকাতাল ফিতরি তুহরাতান লিসসায়িমি মিনাল লাঘবি ওয়াররাফাসি ওয়া তু'মাতান লিল মাসাকিন।"
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতরকে ফরজ করেছেন, যা রোজাদারদের অশালীন কথা ও কাজ থেকে পবিত্র করে এবং দরিদ্রদের খাবারের জন্য।"
[আবু দাউদ, ইবন মাজাহ]
সারসংক্ষেপ
যাকাতুল ফিতর ফরজ হওয়ার জন্য একজন মুসলমানকে তার মৌলিক চাহিদা পূরণের পর নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে। নেসাব পরিমাণ সম্পদ হলো ৫৭৭.৫ গ্রাম রূপা বা তার সমমূল্যের সম্পদ। যদি কারো কাছে এত পরিমাণ সম্পদ থাকে, তাহলে তার উপর যাকাতুল ফিতর ফরজ হবে এবং ঈদুল ফিতরের আগে তা দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে।
যাকাতুল ফিতর রমজান মাসের শেষে ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য ফরজ করা হয়েছে। যাকাতুল ফিতরের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কুরআন ও হাদিসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সামাজিক সাম্য, দরিদ্রদের সহায়তা এবং আত্মিক শুদ্ধি অর্জন করা যায়। নিচে যাকাতুল ফিতরের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো
রোজার সময়কালের ভুলত্রুটি থেকে পবিত্রতা অর্জন
فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ، وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ
উচ্চারণ:
ফারাদা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকাতাল ফিতরি তুহরাতান লিসসায়িমি মিনাল লাঘবি ওয়াররাফাসি ওয়া তু'মাতান লিল মাসাকিন।
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতরকে ফরজ করেছেন, যা রোজাদারদের অশালীন কথা ও কাজ থেকে পবিত্র করে এবং দরিদ্রদের খাবারের জন্য।
[আবু দাউদ, ইবন মাজাহ]
দরিদ্রদের সহায়তা ও ঈদের আনন্দে শামিল করা
যাকাতুল ফিতরের মাধ্যমে দরিদ্রদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হয় যাতে তারা ঈদের আনন্দে অংশ নিতে পারে। এটি সমাজে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক।
সমাজে সমতা প্রতিষ্ঠা
যাকাতুল ফিতর সমাজে অর্থনৈতিক সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে সম্পদ বণ্টনের একটি মাধ্যম।
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ
যাকাতুল ফিতর প্রদান করার মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে। এটি আল্লাহর নৈকট্য ও রহমত লাভের একটি মাধ্যম।
আত্মিক শুদ্ধি
যাকাতুল ফিতর প্রদান করার মাধ্যমে রোজাদার তার আত্মাকে পবিত্র ও শুদ্ধ করতে পারে। এটি রোজার সময়ে ঘটে যাওয়া ছোটখাট ভুলত্রুটি সংশোধনের একটি মাধ্যম।
যাকাতুল ফিতরের নিয়মাবলী
পরিমাণ -
প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির জন্য যাকাতুল ফিতরের পরিমাণ হলো এক সা’ (প্রায় ২.৫ কেজি) খাদ্য সামগ্রী বা এর সমমূল্যের টাকা।
যাদের উপর ফরজ
যাকাতুল ফিতর প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিম, পুরুষ বা মহিলা, শিশু বা প্রাপ্তবয়স্কের উপর ফরজ।
প্রদানের সময়
যাকাতুল ফিতর রমজান মাসের শেষ দিনে সূর্যাস্তের পর থেকে ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে প্রদান করা উত্তম।
কুরআনের আদেশ
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا
উচ্চারণ:
খুজ্ মিন আমওয়ালিহিম সাদাকাতান তুতাহিরুহুম ওয়া তুজাক্কিহিম বিহা।
অর্থ:
তাদের ধন-সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ করো, এর মাধ্যমে তুমি তাদেরকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে।
[সূরা আত-তাওবা, আয়াত ১০৩]
হাদিসের প্রমাণ
أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِزَكَاةِ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، عَلَى الْعَبْدِ وَالْحُرِّ، وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثَى، وَالصَّغِيرِ وَالْكَبِيرِ مِنَ الْمُسْلِمِينَ، وَأَمَرَ بِهَا أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلَاةِ
উচ্চারণ:
আমারা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামি বিজাকাতিল ফিতরি সা'আন মিন তামরিন, আও সা'আন মিন শা'ইরিন, আলাল আবদি ওয়াল হুররি, ওয়াল যাকারি ওয়াল উনথা, ওয়াল সগিরি ওয়াল কাবিরি মিনাল মুসলিমিন, ওয়া আমারা বিহা আন তু'আদ্দা কাবলা খুরুজিন নাসি ইলাস সালাহ।"
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতরকে নির্ধারণ করেছেন এক সা' (প্রায় ২.৫ কেজি) খেজুর বা এক সা' যব, প্রত্যেক দাস, স্বাধীন, পুরুষ, মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ মুসলমানের উপর। এবং তিনি আদেশ দিয়েছেন এটি ঈদের নামাজের জন্য বের হওয়ার আগে প্রদান করতে।"
[সহিহ বুখারি ও মুসলিম]
সারসংক্ষেপ
যাকাতুল ফিতর একটি বাধ্যতামূলক দায়িত্ব যা রমজানের শেষে ঈদুল ফিতরের আগে প্রদান করতে হয়। এটি রোজার সময়ের ভুলত্রুটি সংশোধন, দরিদ্রদের সহায়তা এবং সমাজে অর্থনৈতিক সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কুরআন ও হাদিসে যাকাতুল ফিতরের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। মুসলমানদের উচিত এই ফরজ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রহমত লাভ করা।
যাকাতুল ফিতর আদায় করার সময় এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, এটি এমন ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছায় যারা সত্যিই এর প্রাপ্য। কুরআন এবং হাদিসে যাকাতুল ফিতর প্রাপ্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিচে যাকাতুল ফিতর প্রাপ্য ব্যক্তিদের তালিকা এবং বৈধতার দিক থেকে তাদের অবস্থান উল্লেখ করা হলো
ফকির (অত্যন্ত দরিদ্র)
· যারা মৌলিক চাহিদা পূরণে অক্ষম এবং সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত।
মিসকিন (দরিদ্র)
· যারা কিছু সম্পদ রাখে কিন্তু তা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়।
যাকাত সংগ্রহকারীরা -
· যারা যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণের দায়িত্ব পালন করে।
নব মুসলিম -
· যারা সদ্য ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং সহায়তার প্রয়োজন।
দাস মুক্তির জন্য -
· যারা দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে সাহায্যের প্রয়োজন।
ঋণগ্রস্ত -
· যারা বৈধ ঋণগ্রস্ত এবং ঋণ পরিশোধে অক্ষম।
আল্লাহর পথে সংগ্রামরত ব্যক্তিরা -
· যারা আল্লাহর পথে (ফি সাবিলিল্লাহ) সংগ্রাম করে এবং সহায়তার প্রয়োজন।
মুসাফির (ভ্রমণকারী) -
· যারা ভ্রমণরত অবস্থায় সহায়তা প্রয়োজন এবং নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সামর্থ্য নেই।
কুরআনের আদেশ -
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
উচ্চারণ:
ইন্নামা আস-সাদাকাতু লিলফুকারায়ি ওয়াল মাসাকিনি ওয়াল আমিলীনা আলাইহা ওয়াল মুআল্লাফাতি কুলুবুহুম ওয়া ফির রিকাবি ওয়াল গারিমিনা ওয়া ফি সাবিলিল্লাহি ওয়াবনি সাবিল, ফরিদাতাম মিনাল্লাহি। ওয়াল্লাহু আলীমুন হাকিম।
অর্থ:
সদকাসমূহ তো ফকির, মিসকিন, যাকাত আদায়ের কাজে নিযুক্ত, যাদের মন জয় করা প্রয়োজন, দাস মুক্তি, ঋণগ্রস্ত, আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরদের জন্য নির্ধারিত। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি ফরজ বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।"
[সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৬০]
হাদিসের প্রমাণ
فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ، وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ
উচ্চারণ:
ফারাদা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকাতাল ফিতরি তুহরাতান লিসসায়িমি মিনাল লাঘবি ওয়াররাফাসি ওয়া তু'মাতান লিল মাসাকিন।
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতরকে ফরজ করেছেন, যা রোজাদারদের অশালীন কথা ও কাজ থেকে পবিত্র করে এবং দরিদ্রদের খাবারের জন্য।
[আবু দাউদ, ইবন মাজাহ]
সারসংক্ষেপ
যাকাতুল ফিতর প্রদান করার সময় নিশ্চিত করতে হবে যে, এটি এমন ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে যারা সত্যিই এর প্রাপ্য। ফকির, মিসকিন, যাকাত সংগ্রহকারীরা, নব মুসলিম, দাস, ঋণগ্রস্ত, আল্লাহর পথে সংগ্রামরত ব্যক্তিরা এবং মুসাফিররা যাকাতুল ফিতরের প্রাপ্য ব্যক্তি। কুরআন ও হাদিসে যাকাতুল ফিতরের প্রাপ্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাকাতুল ফিতর প্রদান করে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে এবং সমাজে অর্থনৈতিক সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
যাকাতুল ফিতর রমজান মাসের শেষে ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য ফরজ করা হয়েছে। এটি ইসলামের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত এবং এর আদায় বাধ্যতামূলক। যাকাতুল ফিতর আদায়ের হুকুম সম্পর্কে কুরআন এবং হাদিসে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
যাকাতুল ফিতর আদায়ের হুকুম
ফরজ আদায়
• যাকাতুল ফিতর প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য ফরজ। এটি রমজান মাসের শেষ দিন সূর্যাস্তের পর থেকে ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে প্রদান করতে হবে।
প্রত্যেক মুসলিমের উপর ফরজ
• পুরুষ, মহিলা, শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক সকলের উপর যাকাতুল ফিতর ফরজ করা হয়েছে। যিনি পরিবারের প্রধান, তিনি পরিবারের সকল সদস্যের পক্ষ থেকে যাকাতুল ফিতর আদায় করবেন।
পরিমাণ
• যাকাতুল ফিতরের পরিমাণ হলো এক সা’ (প্রায় ২.৫ কেজি) খাদ্য সামগ্রী যেমন গম, যব, খেজুর, কিসমিস ইত্যাদি। খাদ্য সামগ্রীর পরিবর্তে সমমূল্যের টাকা বা অর্থও প্রদান করা যেতে পারে।
কুরআন ও হাদিসের উদ্ধৃতি
• কুরআনের আদেশ:
যাকাতুল ফিতর সরাসরি কুরআনে উল্লেখ না থাকলেও, সাধারণভাবে দানের গুরুত্ব এবং এর বিধান সম্পর্কে কুরআনে বেশ কিছু আয়াত রয়েছে।
যেমন -
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ إِنَّ صَلَاتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ
বাংলা উচ্চারণ: "খুজ্ মিন আমওয়ালিহিম সাদাকাতান তুতাহিরুহুম ওয়া তুজাক্কিহিম বিহা ওয়াসাল্লি আলাইহিম ইন্না সালাতাকা সাকানুল্লাহুম। ওয়াল্লাহু সামীউন আলীম।"
অর্থ: "তাদের ধন-সম্পদ থেকে সদকা গ্রহণ কর, এর মাধ্যমে তুমি তাদেরকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে এবং তাদের জন্য দোয়া কর। নিঃসন্দেহে তোমার দোয়া তাদের জন্য প্রশান্তি। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী।"
[সূরা আত-তাওবা, আয়াত ১০৩]
• হাদিসের নির্দেশনা
হাদিস ১-
فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ، وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ
উচ্চারণ:
ফারাদা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকাতাল ফিতরি তুহরাতান লিসসায়িমি মিনাল লাঘবি ওয়াররাফাসি ওয়া তু'মাতান লিল মাসাকিন।
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতরকে ফরজ করেছেন, যা রোজাদারদের অশালীন কথা ও কাজ থেকে পবিত্র করে এবং দরিদ্রদের খাবারের জন্য।
[আবু দাউদ, ইবন মাজাহ]
হাদিস ২ -
أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِزَكَاةِ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ، أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ، عَلَى الْعَبْدِ وَالْحُرِّ، وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثَى، وَالصَّغِيرِ وَالْكَبِيرِ مِنَ الْمُسْلِمِينَ، وَأَمَرَ بِهَا أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلَاةِ
উচ্চারণ:
আমারা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামি বিজাকাতিল ফিতরি সা'আন মিন তামরিন, আও সা'আন মিন শা'ইরিন, আলাল আবদি ওয়াল হুররি, ওয়াল যাকারি ওয়াল উনথা, ওয়াল সগিরি ওয়াল কাবিরি মিনাল মুসলিমিন, ওয়া আমারা বিহা আন তু'আদ্দা কাবলা খুরুজিন নাসি ইলাস সালাহ।
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতরকে নির্ধারণ করেছেন এক সা' (প্রায় ২.৫ কেজি) খেজুর বা এক সা' যব, প্রত্যেক দাস, স্বাধীন, পুরুষ, মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ মুসলমানের উপর। এবং তিনি আদেশ দিয়েছেন এটি ঈদের নামাজের জন্য বের হওয়ার আগে প্রদান করতে।
[সহিহ বুখারি ও মুসলিম]
সারসংক্ষেপ
যাকাতুল ফিতর প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য ফরজ এবং এটি রমজান মাসের শেষে ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে প্রদান করতে হয়। যাকাতুল ফিতর প্রদান করার মাধ্যমে রোজার সময়কালের ছোটখাট ভুলত্রুটি সংশোধন করা যায়, দরিদ্র ও অভাবী মানুষের সহায়তা করা হয় এবং সমাজে অর্থনৈতিক সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়। কুরআন ও হাদিসে যাকাতুল ফিতরের গুরুত্ব এবং এর আদায়ের নির্দেশনা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
যাকাতুল ফিতর আদায়ের সুনির্দিষ্ট সময় রয়েছে যা ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী পালন করতে হবে। যাকাতুল ফিতর প্রদান করার সময় সম্পর্কিত নির্দেশনা কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এটি রমজান মাসের শেষে ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে প্রদান করতে হবে।
যাকাতুল ফিতর আদায়ের সময়
উত্তম সময়
• যাকাতুল ফিতর রমজান মাসের শেষ দিন সূর্যাস্তের পর থেকে ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে প্রদান করতে হবে। এটি উত্তম সময় এবং এই সময়ে প্রদান করলে তা ঈদুল ফিতরের আনন্দে দরিদ্র ও অভাবী মানুষদের শামিল করার সুযোগ সৃষ্টি করে।
বিকল্প সময়
• যদি কোনো কারণে ঈদের নামাজের আগে যাকাতুল ফিতর প্রদান করা সম্ভব না হয়, তবে ঈদের নামাজের পরে তা প্রদান করা উচিত। তবে, এই ক্ষেত্রে এটি সাধারণ সদকা হিসেবে গণ্য হবে এবং যাকাতুল ফিতরের মূল ফজিলত পাওয়া যাবে না।
কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা অনুসারে যাকাতুল ফিতর প্রদানের সময় সম্পর্কিত কিছু হাদিস -
হাদিস ১ -
فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ، وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ، مَنْ أَدَّاهَا قَبْلَ الصَّلَاةِ فَهِيَ زَكَاةٌ مَقْبُولَةٌ، وَمَنْ أَدَّاهَا بَعْدَ الصَّلَاةِ فَهِيَ صَدَقَةٌ مِنَ الصَّدَقَاتِ
উচ্চারণ:
ফারাদা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকাতাল ফিতরি তুহরাতান লিসসায়িমি মিনাল লাঘবি ওয়াররাফাসি ওয়া তু'মাতান লিল মাসাকিন। মান আদ্দাহা কাবলাস সালাতি ফাহিয়া যাকাতুন মাকবুলাতুন, ওয়ামান আদ্দাহা বাদাস সালাতি ফাহিয়া সাদাকাতুন মিনাস সাদাকাত।
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতরকে ফরজ করেছেন, যা রোজাদারদের অশালীন কথা ও কাজ থেকে পবিত্র করে এবং দরিদ্রদের খাবারের জন্য। যে ব্যক্তি ঈদের নামাজের আগে যাকাতুল ফিতর প্রদান করে, তা যাকাত হিসেবে গ্রহণযোগ্য হয়, আর যে ব্যক্তি নামাজের পরে প্রদান করে, তা সাধারণ সদকা হিসেবে গণ্য হবে।
[আবু দাউদ, ইবন মাজাহ]
হাদিস ২ -
أَمَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِزَكَاةِ الْفِطْرِ أَنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلَاةِ
উচ্চারণ:
আমারা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামি বিজাকাতিল ফিতরি আন তু'আদ্দা কাবলা খুরুজিন নাসি ইলাস সালাহ।
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) আদেশ দিয়েছেন যে যাকাতুল ফিতর ঈদের নামাজের জন্য বের হওয়ার আগে প্রদান করতে।
[সহিহ বুখারি ও মুসলিম]
সারসংক্ষেপ
যাকাতুল ফিতর আদায়ের উত্তম সময় হলো রমজান মাসের শেষ দিন সূর্যাস্তের পর থেকে ঈদুল ফিতরের নামাজের আগে। এই সময়ে যাকাতুল ফিতর প্রদান করলে তা ঈদুল ফিতরের আনন্দে দরিদ্র ও অভাবী মানুষদের শামিল করার সুযোগ সৃষ্টি করে। যদি কোনো কারণে ঈদের নামাজের আগে যাকাতুল ফিতর প্রদান করা সম্ভব না হয়, তবে ঈদের নামাজের পরে তা প্রদান করা উচিত, যদিও তা সাধারণ সদকা হিসেবে গণ্য হবে। যাকাতুল ফিতর প্রদান করে মুসলমানরা তাদের রোজার সময়কালের ভুলত্রুটি সংশোধন করতে পারে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে।
যাকাতুল ফিতরের মাধ্যমে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করা হয় এবং সমাজে অর্থনৈতিক সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়। কুরআন ও হাদিসে যাকাতুল ফিতর প্রাপ্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। নিম্নে যাকাতুল ফিতর বণ্টনের খাতসমূহ উল্লেখ করা হলো:
যাকাতুল ফিতর বণ্টনের খাতসমূহ -
ফকির (অত্যন্ত দরিদ্র) -
• যারা সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত এবং মৌলিক চাহিদা পূরণে অক্ষম।
মিসকিন (দরিদ্র) -
• যারা কিছু সম্পদ রাখে কিন্তু তা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়।
যাকাত সংগ্রহকারীরা -
• যারা যাকাত সংগ্রহ ও বিতরণের দায়িত্ব পালন করে।
নব মুসলিম -
• যারা সদ্য ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং সহায়তার প্রয়োজন।
দাস মুক্তির জন্য -
• যারা দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে সাহায্যের প্রয়োজন।
ঋণগ্রস্ত -
• যারা বৈধ ঋণগ্রস্ত এবং ঋণ পরিশোধে অক্ষম।
আল্লাহর পথে সংগ্রামরত ব্যক্তিরা -
• যারা আল্লাহর পথে (ফি সাবিলিল্লাহ) সংগ্রাম করে এবং সহায়তার প্রয়োজন।
মুসাফির (ভ্রমণকারী) -
• যারা ভ্রমণরত অবস্থায় সহায়তা প্রয়োজন এবং নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সামর্থ্য নেই।
কুরআনের আদেশ -
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللَّهِ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
উচ্চারণ:
ইন্নামা আস-সাদাকাতু লিলফুকারায়ি ওয়াল মাসাকিনি ওয়াল আমিলীনা আলাইহা ওয়াল মুআল্লাফাতি কুলুবুহুম ওয়া ফির রিকাবি ওয়াল গারিমিনা ওয়া ফি সাবিলিল্লাহি ওয়াবনি সাবিল, ফরিদাতাম মিনাল্লাহি। ওয়াল্লাহু আলীমুন হাকিম।
অর্থ:
সদকাসমূহ তো ফকির, মিসকিন, যাকাত আদায়ের কাজে নিযুক্ত, যাদের মন জয় করা প্রয়োজন, দাস মুক্তি, ঋণগ্রস্ত, আল্লাহর পথে এবং মুসাফিরদের জন্য নির্ধারিত। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি ফরজ বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
[সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৬০]
হাদিসের প্রমাণ -
فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ، وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ
উচ্চারণ:
ফারাদা রাসুলুল্লাহি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যাকাতাল ফিতরি তুহরাতান লিসসায়িমি মিনাল লাঘবি ওয়াররাফাসি ওয়া তু'মাতান লিল মাসাকিন।"
অর্থ:
রাসূলুল্লাহ (সা.) যাকাতুল ফিতরকে ফরজ করেছেন, যা রোজাদারদের অশালীন কথা ও কাজ থেকে পবিত্র করে এবং দরিদ্রদের খাবারের জন্য।"
[আবু দাউদ, ইবন মাজাহ]
সারসংক্ষেপ
যাকাতুল ফিতর বণ্টনের জন্য নির্ধারিত খাতসমূহ হলো ফকির, মিসকিন, যাকাত সংগ্রহকারীরা, নব মুসলিম, দাস মুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্ত, আল্লাহর পথে সংগ্রামরত ব্যক্তিরা এবং মুসাফির। কুরআন ও হাদিসে যাকাতুল ফিতরের প্রাপ্য ব্যক্তিদের সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। যাকাতুল ফিতর প্রদান করে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে এবং সমাজে অর্থনৈতিক সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।