• চেহারা বা অন্য কোনো অঙ্গ ধোয়ার সময় জোরে পানি মারা।
• বাম হাতে কুলি করা কিংবা নাকে পানি দেয়া।
• ডান হাতে নাক ঝাড়া ও পরিষ্কার করা।
• একবারের বেশি মাথা মাসেহ করা।
• পানি অপচয় করা।
• যে অঙ্গগুলো তিনবার করে ধোয়া সুন্নত সেগুলো এর চেয়ে বেশি পরিমাণে ধোয়া।
[আদদুররুল মুখতার - ১/২৫৭-২৫৮]
ওজুর বিবিধ মাসায়েল পানির অপচয় না করা –
মাসআলা: বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ওজুতে পানির অপচয় হয়। পানির অপচয় যেন না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। মাসআলা: সরাসরি পানির টেপ ছেড়ে কিংবা টিউবওয়েল চেপে ওজু করলে পানির অপচয় হওয়াটাই স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে কোনো পাত্রে, যেমন বদনা মগ বালতি ইত্যাদিতে পানি নিয়ে সেখান থেকে ওজু করলে এ অপচয় থেকে বাঁচা যায়। পাত্রের ভেতর হাত ঢুকিয়ে ওজু করলে
মাসআলা: মগ বা বালতি থেকে বারবার হাতে পানি নিয়ে ওজু করলে অবশিষ্ট পানি 'ব্যবহৃত পানি' হয়ে যায় না। এমন এক পাত্র থেকে একসঙ্গে একাধিক মানুষ কিংবা একজন ওজু করার পর অবশিষ্ট পানি দিয়ে আরেকজন ওজু করতে কোনো সমস্যা নেই।
মাসআলা: ওজুর শেষে গামছা তোয়ালে ইত্যাদি দিয়ে শরীরের ভেজা অঙ্গগুলো মোছা জায়েজ। এতে কোনো সমস্যা নেই। সওয়াব কমে যাওয়ারও কোনো আশঙ্কা নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীদের থেকেও ওজুর পর কাপড় দিয়ে পানি মোছার বিষয়টি প্রমাণিত।
[সুনানে তিরমিযী - ১/৭৪, আদদুররুল মুখতার - ১/২২৯]
মাসআলা: একবার ওজু করে নামাজ পড়ার পর পরবর্তী নামাজের সময় যদি ওজু থাকে তাহলে আগের ওজু দিয়েও নামাজ পড়া যাবে। এতে সমস্যা নেই। তবে প্রত্যেক নামাজ নতুন নতুন ওজু দিয়ে পড়া ভালো।
মাসআলা: একবার ওজু করার পর সেই ওজু দিয়ে যদি এমন কোনো ইবাদত করা না হয় যা ওজু ছাতত্ত্ব আদায় করা যায় না, যেমন নামাজ, তওয়াফ ইত্যাদি, তাহলে সেই ওজু থাকাবস্থায় দ্বিতীয়বার ওজু করা মাকরুহ। আর যদি প্রথম ওজু দিয়ে দুই রাকাত নফল নামাজও পড়া হয় তাহলেও দ্বিতীয়বার ওজু করায় কোনো সমস্যা নেই। বরং ওজু করলেই বেশি সওয়াব পাওয়া যাবে।
মাসআলা: অনেকেই ওজুর শুরুতে যদি পা ভিজিয়ে নেন কিংবা ওজুর অঙ্গগুলোতে তেল জাতীয় কিছু মেখে নেন। এতে সহজেই ভালোভাবে পুরো অঙ্গে পানি পৌঁছানো সম্ভব হয়। বিশেষত শীতের মৌসুমে এর প্রয়োজন হতে পারে। এ উদ্দেশ্যে যদি কেউ এভাবে শুরুতে পা ভিজিয়ে নেয় কিংবা তেল মেখে নেয়, তবে এতে কোনো অসুবিধে নেই। বরং হানাফী মাযহাবের কোনো কোনো ফকীহ এর পরামর্শও দিয়েছেন। তবে একে ওজুর আদাব বা কোনো নিয়ম মনে করা যাবে না।
[ফাতাওয়া আলমগীরী - ১/৯]
মাসআলা: ওজু করার সময় যদি ভুলবশত কোনো অঙ্গ ধোয়া না হয়, কিংবা কোনো অঙ্গের আংশিক শুকনো থেকে যায়, এবং এ বিষয়টি পরবর্তীতে নজরে আসে, তাহলে ঐ অংশটুকু ধুয়ে নিলেই হবে। নতুন করে পূর্ণ ওজু করতে হবে না। অবশ্য নতুন ওজু করে নেয়াটা ভালো। আর যদি এ ওজুতে কোনো নামাজ পড়া হয়ে থাকে, তাহলে সে নামাজ আবার আদায় করতে হবে।
[শারহুল মুনয়া - ৫০]
মাসআলা: ওজুর সময় যদি নখের ভেতর আটা, ময়লা বা এ জাতীয় কিছু লেগে থাকে, তবে সে আটা বা ময়লা ভিজে তার নিচে পানি পৌছালেই হবে। সেখানে পানি প্রবাহিত করা জরুরি নয়।
[ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী - ১/৪]
মাসআলা: গোল্ড মেহেদী বা টিউব মেহেদী ব্যবহার করা জায়েয। এবং এগুলো ব্যবহার করে প্রলেপ উদ্ভিয়ে ফেলার পর অযু-গোসল সবই সহীহ হবে। কেননা এ মেহেদী লাগানোর পর শরীরে যে রঙ অবশিষ্ট থাকে যার কোনো কোনোটিতে পরবর্তীতে আবরণের মতো উঠে তা আমাদের জানামতে চামড়ায় পানি পৌঁছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক নয়। তাই এগুলো ব্যবহার করতে সমস্যা নেই।
[রদ্দুল মুহতার - ১/২৮৮]
মাসআলা: ওজুর সময় কেউ যদি পানি এনে দেয় কিংবা পানি ঢেলে দেয়, তবে অসুবিধা নেই। কিন্তু যদি নিজের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অন্য কেউ অঙ্গসমূহ ডলে ডলে ধুয়ে দেয় তবে তা মাকরুহ হবে। আর যদি সক্ষমতা না থাকে, কিংবা অত্যধিক কষ্ট হয়, তবে এ সহযোগিতা নিতেও অসুবিধা নেই।
[বুখারী - ১৮১, ১৮২; রদ্দুল মুহতার - ১/২৪১]