প্রত্যেক সালাত নির্ধারিত ওয়াক্তের মধ্যে আদায় করা। তবে আউয়াল ওয়াক্তে অর্থাৎ শুরুর সময়ে আদায় করা আল্লাহ তাআলার কাছে অধিকতর পছন্দনীয়। তাকওয়ার দাবি হলো আগে নামায, পরে কাজ। আগে কাজ, পরে নামায নয়। যারা কাজকর্মকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে নামায দেরিতে পড়াকে অভ্যাসে পরিণত করে তারা গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন,
“ঐসব নামাযীদের জন্য ওয়াইল বা ধ্বংস, যারা তাদের নামাযের ব্যাপারে গাফেল।”
[সূরা মাউন ৪-৫]
আর গাফেল হলো ঐসব লোক, যারা পেছাতে পেছাতে নামায শেষ ওয়াক্তে পড়ে এবং হুকুম আহকাম গুলো ঠিকমতো আদায় করে না।
পূর্ণ দেহসহ কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়ানো।
জামাআতে দাঁড়ানোর সময় সাহাবাগণ পরস্পর একে অপরের পায়ের সাথে পা ও কাধের সাথে কাঁধ মিলিয়ে কাতার সোজা করে মিশে মিশে দাঁড়াতেন। আনাস (রা) বলেন,
“আমাদের কেউ কেউ তার পাশের মুসল্লির কাধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিশিয়ে দাঁড়াত।”
[বুখারী: ৭২৫, ইফা ৬৮৯]
সাহাবীগণ দু’জনের মাঝে কোন ফাঁকা রাখতেন না। জামায়াতে নামাযের ক্ষেত্রে দু’জন মুসল্লির মাঝে কোন ফাঁকা রাখা জায়েয- এমন কোন হাদীস নেই; বরং ফাকা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে। কেননা ফাকা থাকলে সেখানে শয়তান ঢুকে পড়ে। আপনার ডানে ও বামে শয়তান সাথে নিয়ে নামায পড়বেন- এ কেমন কথা! আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন,
“তোমরা তোমাদের কাতারে পরস্পর মিলে মিলে দাঁড়াও, একে অপরের নিকটবর্তী হও এবং ঘাড়গুলোকে সমানভাবে সোজা রেখে দাঁড়াও। সেই মহান সত্তার (আল্লাহর) কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, আমি দেখতে পাই কাতারে কোথাও ফাঁকা থাকলে সেখানেই শয়তান ঢুকে পড়ে কালো ভেড়ার বাচ্চার আকৃতিতে।”
[আবু দাউদ- ৬৬৬]
যারা আগে আসবেন তারা সামনের কাতারে এগিয়ে। বসবেন অন্যকে সামনের কাতারে যাওয়ার অনুরোধ না করে অধিক সওয়াব লাভের আশায় নিজেই সেই সুযোগ গ্রহণ করুন। আর মসজিদের গেটে বা দরজায় বা সিঁড়িতে বসে মুসল্লিদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো যাবে না। আর যারা পরে আসবেন, তারাও অন্যদের ঘাড় ডিঙিয়ে সামনে এগিয়ে যাবেন না।
আহকাম শব্দটি বহুবচন, একবচনে হুকুম। এগুলো হলো সালাতের বাইরের ফরয সালাতের শর্তসমূহকে আহকাম বা আরকান বলা হয়ে থাকে। সালাতের আহকাম সাতটি
· শরীর পাক (অর্থাৎ সালাতের আগে ওযু করে পবিত্র হতে হবে, আর গোসল ফরয হলে আগে গোসল করে নিতে হবে),
· পোশাক পাক,
· জায়গা পাক,
· সময় হওয়া,
· সতর ঢাকা,
· কিবলামুখী হওয়া,
· নিয়ত করা।
অপরদিকে সালাত ফরয হওয়ার জন্য বিজ্ঞ ফকীহগণ আরও ৩টি শর্ত যোগ করেছেন। আর তা হলো-
· ইসলাম গ্রহণ
· হুঁশ-জ্ঞান থাকা ও
· প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া।