কাতার সোজা করার নিয়ম হলো, সকল নামাযী টাখনু এবং পায়ের গোড়ালি পেছনের দিক থেকে বরাবর করে দাঁড়ালে কাতার সোজা হবে। সামনের দিক থেকে আঙ্গুল বরাবর করার প্রয়োজন নেই। কেননা, পা লম্বা বা বেঁটে হওয়ার কারণে পায়ের অগ্রভাগ আগে পিছে থাকলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই।
[আল বাহরুর রায়েক: খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৩৫৩]
জামাতের নামাযে টাখনু টাখনুর সাথে এবং কাঁধ কাঁধের সাথে মিলিয়ে দাঁড়ালে কাতার সোজা হবে। টাখনু এবং পায়ের গোড়ালি বরাবর সমান করে দাঁড়াবে। সামনের দিক থেকে আঙ্গুল বরাবর সমান করার প্রয়োজন নেই।
যদি কাতারে জায়গা না থাকে, তাহলে ইমামের রুকু করা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। যদি কেউ এসে যায়, তাহলে তাকে নিয়ে ইমামের বরাবর পেছনের কাতারে দাঁড়াবে। যদি কেউ না আসে, তাহলে একাকীই ইমামের বরাবর পেছনের কাতারে দাঁড়িয়ে যাবে।
[ফাতাওয়া শামী: খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৫৬৮, আল বাহরুর রায়েক: খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৬১৭, খণ্ড-১, পৃষ্ঠা- ৩৫৩]
লোকদের উচিত যখন জামাতের নামাযের জন্য কাতারে দাঁড়াবে, তখন মিলেমিশে দাঁড়াবে এবং খালি জায়গা পূরণ করে দাঁড়াবে। একজন অপর জনের সাথে মিলে পরস্পরে কাঁধ বরাবর করে কাতারে দাঁড়াবে।
[মুহীতে বুরহানী: খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-২০২, আদ দুররুল মুখতার মা'আ রদ: খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৫৬৮, আল বাহরুর রায়েক: খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-৬১৮-৬১৯, আবু দাউদ: খণ্ড-১, পৃষ্ঠা-১০৬]
রাসূলুল্লাহ (স) তাঁর নামাযে বুকের উপর হাত রাখতেন।
তাঁর সাহাবী ওয়াইল বিন হুজুর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“আমি নবী (স)-এর সাথে সালাত আদায় করেছি। (আমি দেখেছি) তিনি (স.) তার বুকের উপর ডান হাত বাম হাতের উপর রেখেছেন।”
[সহীহ ইবনু খুযাইমা, পৃষ্ঠা ২, আবু দাউদ: ৭৫৯, আলবানী]
অপর এক সাহাবী সাহল ইবনে সা'দ (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন
“সালাতে লোকদেরকে ডান হাত বাম হাতের বাহুর উপর রাখার নির্দেশ দেওয়া হতো।”
[বুখারী: ৭৪০, ইফা: ৭০৪]
আরবীতে কাফফ’ শব্দের অর্থ হলো, কজি পর্যন্ত হাত, আর ‘যিরা’ অর্থ হলো, হাতের আঙুলের অগ্রভাগ থেকে কনুই পর্যন্ত পূর্ণ এক হাত বা বাহু। অতএব, উক্ত হাদীসের মর্ম ও নির্দেশ অনুযায়ী ডান হাতের আঙুলগুলো বাম কনুই’র কাছাকাছি থাকবে।
[আবু দাউদ: ৭৫৯ আলবানী]
কেউ কেউ বলেছেন, নাভির নিচে হাত বাঁধা সুন্নাত। তবে নাভির নিচে হাত বাঁধার হাদীসগুলো দুর্বল।
[আলবানীর যঈফ আবু দাউদ- ৭৫৬, ৭৫৮]
অতএব, সহীহ হাদীস বাদ দিয়ে এর বিপরীতে দুর্বল হাদীস আমল করা জায়েয নেই। আবার কেউ কেউ বলেন, নারীরা বুকে বাঁধবে আর পুরুষেরা বাঁধবে নাভির নিচে। এ বিষয়ে আল্লাহর রাসূল (স) যেখানে কোন পার্থক্য করেননি সেখানে আলেমগণ কিভাবে পার্থক্য করেন? স্বতঃসিদ্ধ বিষয় হলো, এ হাদীসের নির্দেশ পুরুষ ও নারী সকলের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। অর্থাৎ সহীহ হাদীসের আলোকে প্রমাণিত যে, বুকের উপর হাত রাখা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই সুন্নাত।
‘রুক‚’ অর্থ ‘মাথা ঝুঁকানো’
পারিভাষিক অর্থ, শারঈ তরীকায় আল্লাহর সম্মুখে মাথা ঝুঁকানো’। সালাতে রুকূ করা আবশ্যক একটি কাজ। যা ছুটে গেলে সালাত বাতিল হয়ে যাবে। ক্বিরাআত শেষে মহাপ্রভু আল্লাহর সম্মুখে শ্রদ্ধার সাথে মাথা ও পিঠ ঝুঁকিয়ে রুকূতে যেতে হয়। রুকূতে যাওয়ার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবীরের সাথে দুই হাত কাঁধ পর্যন্ত সোজাভাবে উঠাবে।
রুকূর জন্য হাদীছে অনেকগুলি দো‘আ এসেছে। তন্মধ্যে রুকূর জন্য বহুল প্রচলিত দো'আ হল -
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ
উচ্চারণ:
সুবহা-না রব্বিয়াল ‘আযীম।
অর্থ:
মহা পবিত্র আমার প্রতিপালক যিনি মহান’।
[আবুদাঊদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৮৮১]
এই দো‘আ তিনবার পড়বে। বেশির কোন সংখ্যা নির্দিষ্ট নেই। যত বার খুশি পড়তে পারেন।
[আহমাদ, আবুদাঊদ হা/৮৮৫; ইবনু মাজাহ হা/৮৮৮; আলবানী, সিফাত, ১১৩ পৃঃ, ‘রুকূর দো‘আ সমূহ’ অনুচ্ছেদ, টীকা-২ ও ৩।]
উল্লেখ্য যে, ঊর্ধ্বে দশবার পড়ার হাদীসটি ‘যঈফ’।
[তিরমিযী, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৮৮০, ৮৮৩ ‘সালাত’ অধ্যায়-৪, ‘রুকূ‘ অনুচ্ছেদ-১৩]
তবে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জীবনের শেষদিকে এসে রুকূ ও সিজদাতে এমনকি সালাতের বাইরে অধিকাংশ সময় নিম্নোক্ত দো‘আটি পড়তেন।
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ رَبَّنا وَبِحَمْدِكَ، اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ-
উচ্চারণ:
সুবহ-নাকা আল্লা-হুম্মা রব্বানা ওয়া বিহাম্দিকা, আল্লা হুম্মাগ্ফিরলী।
অর্থ:
হে আল্লাহ হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার প্রশংসার সাথে আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন!
[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৮৭১; নায়লুল আওত্বার ৩/১০৬]
এতদ্ব্যতীত নিম্নেরুকূর অন্যান্য দো‘আ সমূহএকত্রে একই সময়ে কিংবা পৃথকভাবে বিভিন্ন সময়ে পড়া যায়। যেমন -
سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ وَبِحَمْدِهِ-
উচ্চারণ:
সুবহানা রাব্বী ইয়াল আযীম ওয়াবেহামদীহী। (তিন বার)।
سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّ الْمَلاَئِكَةِ وَالرُّوْحِ
উচ্চারণ:
সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুল মালা-ইকাতি ওয়ার রূহে। (মুসলিম)।
اَللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَلَكَ أَسْلَمْتُ، خَشَعَ لَكَ سَمْعِيْ وَبَصَرِيْ وَمُخِّيْ وَعَظْمِيْ وَعَصَبِيْ- (مسلم وغيره)
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা লাকা রকায়তু, ওয়াবিকা আ-মানাতু, ওয়া লাকা আ'সলামতু, খাশায়া লাকা সাম'ঈ ওয়া বাসরী ওয়া মুখ্খী ওয়া আজমী ওয়া আসবী। (মুসলিম)।
- اَللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ وَبِكَ أَسْلَمْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ، اَنْتَ رَبِّى خَشَعَ سَمْعِىْ وَبَصَرِىْ وَدَمِىْ وَلَحْمِىْ وَعَظْمِىْ وَعَصَبِىْ للهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ- (نسائى)
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা লাকা রাকা'তু ওয়া বিকা আসলামতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু, আনতা রাব্বী খাশায়া সামঈ ওয়া বাসরী ওয়া দামী ওয়া লাহমী ওয়া আজমী ওয়া আসবিল্লাহি রাব্বীল আ-লামী-ন।
سُبْحَانَ ذِي الْجَبَرُوْتِ وَالْمَلَكُوْتِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْعَظْمَةِ-
উচ্চারণ:
সুবহানা জিল জাবারুতে ওয়াল মালা কুতে ওয়াল কিবরিয়ায়ে ওয়াল করছ
নবী করীম (স.) সিজদারত অবস্থায় হাতের তালু মাটিতে বিছিয়ে রাখতেন
[বুখারী - ৮২৮, ইফা - ৭৯০, আধুনিক - ৭৮২]
সাতটি অঙ্গের উপর ভর দিয়ে সিজদা করতেন
[বুখারী - ৮১২, মুসলিম – ৪৯০]
যেমন-
কপাল ও নাক [তিনি (স.)] হাত দিয়ে নাকের প্রতি ইশারা করে নাককে কপালের অন্তর্ভুক্ত করেন)
[বুখারী - ৮১২], ইফা - ৭৭৫, আধুনিক - ৭৬৭]
[সহীহ ইবনে খুযাইমা - ৬৫৪]
সে সময় রাসূল (স.)-এর মুখমণ্ডল তাঁর দুই হাতের মধ্যবর্তী স্থানে কাধ বা কান বরাবর রাখতেন এবং হাতের কজি থেকে কনুই পর্যন্ত তার বাহু যমীন থেকে উপরে উঠিয়ে রাখতেন। সাবধান! কুকুরের মতো কনুই পর্যন্ত হাত দুটো যমীনে বিছিয়ে দেবে না
[বুখারী - ৮২২, আধুনিক – ৭৭৬]
তিনি দুই পায়ের আঙুলে ভর করে হাঁটু দাঁড় করিয়ে রাখতেন। কনুই ও বগল ফাঁকা থাকবে। সিজদা লম্বা হবে এবং পিঠ সোজা থাকবে। আল্লাহ ঐ বান্দার সালাতের দিকে তাকান না, যে ব্যক্তি তার সালাতে রুকু ও সিজদার মধ্যে নিজের মেরুদণ্ড সোজা করে না
[আহমাদ- ২/৫২৫; তাবরানী; মুজামুল কবীর- ৮/৩৩৮]
রাসূলুল্লাহ (স.) পেট থেকে উরু এতটুকু পরিমাণ দূরে রাখতেন, যাতে উক্ত ফাঁকা অংশ দিয়ে একটি বকরির বাচ্চা বা ছাগল ছানা আসা-যাওয়া করতে পারে
[মুসলিম -৪৯৬]
তাছাড়া দুই উরুর মাঝখানে একটু ফাঁকা থাকবে। পুরুষ ও মহিলা উভয়েই এই একই পদ্ধতিতে রাসূলুল্লাহ (স.)-এর মতো সিজদা করবে। মেয়েদের আলাদা পদ্ধতিতে সিজদা করার কোন কথা হাদীসে নেই। মেয়েদের কেউ কেউ হাত ও কনুই পর্যন্ত বাহু জমিনে বিছিয়ে বিছানার সাথে একেবারে মিশে গিয়ে সিজদা করে। অথচ এমনভাবে সিজদা করতে আল্লাহর রাসূল (স.) নিষেধ করেছেন। সিজদা করার এ পদ্ধতিকে রাসূলুল্লাহ (স.) কুকুরের বসার সাথে তুলনা করেছেন। আনাস বিন মালেক (রা) বর্ণিত এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ (স.) বলেছেন,
“সিজদার সময় তোমাদের কেউই যেন দুই বাহু বিছিয়ে না দেয়, যেমনভাবে বিছিয়ে দেয় কুকুর।”
[বুখারী-৮২২, ইফা - ৭৮৪, আধুনিক - ৭৭৬]
সিজদায় গিয়ে যা পড়তে হয়
সিজদা হল দো‘আ কবুলের সর্বোত্তম সময়। আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন -
أَقْرَبُ مَا يَكُوْنُ الْعَبْدُ مِنْ رَّبِّهِ وَهُوَ سَاجِدٌ فَأَكْثِرُوا الدُّعَاঅর্থ:
বান্দা স্বীয় প্রভুর সর্বাধিক নিকটে পৌঁছে যায়, যখন সে সিজদায় রত হয়। অতএব তোমরা ঐ সময় বেশী বেশী প্রার্থনা কর’।
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘তোমরা প্রার্থনায় সাধ্যমত চেষ্টা কর। আশা করা যায়, তোমাদের দো‘আ কবুল কর[মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯৪, অনুচ্ছেদ-১৪]
তিনি আরও বলেন, রুকূ ও সিজদাতে কমপক্ষে তিনবার তাসবীহ পাঠ করবে।
[ইবনু মাজাহ হা/৮৮৮]
• সিজদার জন্য হাদীসে অনেকগুলি দো‘আ এসেছে। তার মধ্যে বহুল প্রচলিত দো'আ হল -
سُبْحَانَ رَبِّىَ الْأَعْلَى
উচ্চারণ:
সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা।অর্থ:
মহা পবিত্র আমার প্রতিপালক যিনি সর্বোচ্চ।
এই দো'আটি তিনবার বলা। তবে তিনবারের বেশীও বলা যেতে পারে।
• সিজদার অন্যান্য দো'আ হল -
اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ ذَنْبِيْ كُلَّهُ دِقَّهُ وَجِلَّهُ وَ أَوَّلَهُ وَآخِرَهُ وَعَلاَنِيَتَهُ وَسِرَّهُ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাগ ফীরলী যানবী কুল্লাহু দিক্কাহূ ওয়া জিল্লাহূ ওয়া আও ওয়ালাহূ ওয়া আ-খিরাহূ ওয়া আলঅ-নীয়াতাহূ ওয়া সির্রাহূ।
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ لآ إِلَهَ إِلاَّ أ
উচ্চারণ:
সুবহানাকাল ল্লাহুম্মা ওয়াবিহামদিকা লা-ইলাহা ইল্লা আন্তা।
اَللَّهُمَّ اغْفِرْ لِيْ مَا أَسْرَرْتُ وَمَا أَعْلَنْتُ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মাগ ফীরলী মা-আসররতু ওয়া মা-আ'লানতু।
اَللَّهُمَّ إنِّيْ أَعُوْذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ، وَأَعُوْذُ بِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوْبَتِكَ، وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْكَ، لاَ أُحْصِيْ ثَنَاءً عَلَيْكَ، أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্নী আ'উজুবিরি-য-কা মিন সাখাতিকা, ওয়া আউজুবিমুআ-ফা-তিকা মিন উকুবাতিকা, ওয়া আউজুবিকা মিনকা, লা- উহসী ছানা-আন আলাইকা, আ'নতা কামা- আছনায়তা আলা নাফসিকা।
اَللَّهُمَّ لَكَ سَجَدْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَلَكَ أَسْلَمْتُ وَ أَنْتَ رَبِّىْ، سَجَدَ وَجْهِيَ لِلَّذِيْ خَلَقَهُ وَصَوَّرَهُ فَأَحْسَنَ صُوَرَهُ وَشَقَّ سَمْعَهُ وَبَصَرَهُ، فَتَبَارَكَ اللهُ أَحْسَنُ الْخَالِقِيْن
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা লাকা সাজাদতু, ওয়া বিকা আ-মানতু, ওয়া লাকা আসলামতু ওয়া আনতা রব্বী, সাজাদা ওয়াযহীয়া লিল্লাজি খালাকাহু ওয়া সও ওয়ারাতু ফা-আ'আহসানা সুওয়ারাহূ ওয়া শাক্কা সামউহূ ওয়া বাসারহূ,ুউচ্চ মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি।
দুই সিজদার মাঝখানে গুরুত্বপূর্ণ দো'আ রয়েছে। যে দো'আটি এতটাই সারগর্ভপূর্ণ যে, যদি সেই একটি দো'আ কবুল হয় তবে মানুষের জীবন সব দিক দিয়ে ইহ-পরকালে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। আমরা সেই দো'আটি শিখব। তার আগে জেনে নেওয়া দরকার একটি সিজদার পর আর একটি সিজদা দেওয়ার আগে অর্থ্যাৎ দুই সিজদার মাঝখানে কিভাবে বসতে হয়। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন -
وَيَرْفَعُ رَأْسَهُ حَتَّى يَسْتَوِيَ قَاعِدًا
অর্থ:
(একটি সিজদার পরে উঠে এমনভাবে বসবে) যাতে শরীরের জোড়াসমূহ স্ব-স্ব স্থানে যথারীতি অবস্থান করে।
[আবু দাউদ হা/৮৫৭]
দুই সিজদার মাঝখানে পড়ার দুইটি দো'আ রয়েছে। যেকোন একটি পড়তে হয়। দো'আ দুটি হল -
رَبِّ اغْفِرْ لِي، رَبِّ اغْفِرْ لِي
উচ্চারণ:
রব্বিগফির লী, রব্বিগফির লী।
অর্থ:
হে আমার রব! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। হে আমার রব! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।
[আবূ দাউদ ১/২৩১]
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَاجْبُرْنِي وَاهْدِنِي وَارْزُقْنِي
উচ্চারণ:
আল্লা-হুম্মাগফির লী, ওয়ারহামনী, ওয়াহদিনী, ওয়াজবুরনী, ওয়া‘আফিনি, ওয়ারযুক্বনী, ওয়ারফা‘নী।
অর্থ:
হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন, আমাকে নিরাপত্তা দান করুন, আমাকে রিযিক দান করুন এবং আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করুন”।
[আবূ দাউদ, ১/২৩১, নং ৮৫০; তিরমিযী, নং ২৮৪, ২৮৫;া -৭৫৬, মুসলিম - ৪৭১]
অতঃপর ডানে ও বামে আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে সালাম ফিরিয়ে সালাত সমাপ্ত করবে। সালাম দুদিকে ফিরালেও মূলতঃ এটাকে একটি কাজ ধরা হয়। সেজন্য একদল ফকীহর মতে, সবচেয়ে সহীহ পদ্ধতি হলো, ইমাম সাহেবের দ্বিতীয় সালাম ফেরানো শেষ হলে মুক্তাদিরা প্রথম সালাম শুরু করবে। অতঃপর দ্বিতীয় সালাম ফেরাবে। মক্কা মুকাররমা ও মদীনা মুনাওয়ারার মসজিদুল হারাম ও মাসজিদুন নববীসহ সে দেশের মসজিদগুলোতে মুসল্লিরা এভাবেই সালাম ফেরায়।
একবচনে রুকন ও বহুবচনে আরকান। এগুলো হলো নামাযের ভেতরের ফরয। এর সংখ্যা নিয়েও আলেমগণের মতভেদ রয়েছে। তবে বিশুদ্ধ দলীল-প্রমাণের ভিত্তিতে বিজ্ঞ ফকীহগণের মতে, সালাতের রুকন ১০টি
[সহীহ বুখারী]