লাইলাতুল কদর অর্থ কি?

লাইলাতুল কদর অর্থ কি?
লাইলাতুল কদর অর্থ কি? লাইলাতুল কদরের ব্যাখ্যাঃ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; রমজান মাসের শেষ দশকের বিজোড় সংখ্যার রাত্রিগুলোতে শবে কদর অনুসন্ধান করা মুস্তাহাব। মহানবী সঃ লাইলাতুল কদর পাওয়ার জন্য উক্ত রাত্রিগুলোতে বড় মেহনত করতেন। রমযানের শেষ দশক এসে উপস্থিত হলে আল্লাহর রাসূল সঃ (ইবাদতের জন্য) নিজের কোমর (লুঙ্গি) বেঁধে নিতেন, সারা রাত্রি জাগরণ করতেন এবং আপন পরিজনকেও জাগাতেন। তাছাড়া শবে কদরের সন্ধানে ও আশায় তিনি ঐ শেষ দশকের দিবারাত্রে ইতিকাফ করতেন। আসুন! আমরা দেখি লাইলাতুল কদর বা শবে কদর অর্থ কি? তার কদর কতটুকু? এবং তার আহকাম কি? আরবি লাইলাতুল ক্বাদর শব্দের ফারসি, উর্দু, হিন্দী ও বাংলা অর্থ হলো শবে কদর। আরবিতে ‘লাইলাহ’ এবং ফারসীতে ‘শব’ শব্দের মানে হল রাত। কিন্তু ক্বাদর শব্দের মানে বিভিন্ন হতে পারে। আর সে জন্যই এর নামকরণের কারণ ও বিভিন্ন। যেমনঃ ১। ক্বাদর মানে তকদীর। সুতরাং লাইলাতুল ক্বাদর বা শবে কদরের মানে তকদীরের রাত বা ভাগ্য-রজনী। যেহেতু এই রাতে মহান আল্লাহ আগামী এক বছরের জন্য সৃষ্টির রুযী, মৃত্যু ও ঘটনা ঘটনের কথা লিপিবদ্ধ করে থাকেন। যেমন তিনি এ কথা কুরআনে বলেন, এই রজনীতে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। (কুঃ ৪৪/৪) আর এই তকদীর; যা বাৎসরিক বিস্তারিত আকারে লেখা হয়। এ ছাড়া মাতৃগর্ভে ভ্রূণ থাকা অবস্থায় লেখা হয় সারা জীবনের তকদীর। আর আদি তাকদীর; যা মহান আল্লাহ আসমান যমীন সৃষ্টি করার ৫০ হাজার বছর পূর্বে লাওহে মাহফুজ-এ লিখে রেখেছেন। ২। ক্বাদরের আর একটি অর্থ হল, কদর, শান, মর্যাদা, মাহাত্ম্য ইত্যাদি। যেমন বলা হয়ে থাকে, সমাজে অমুকের বড় কদর আছে। অর্থাৎ, তার মর্যাদা ও সম্মান আছে। অতএব এ অর্থে শবে কদরের মানে হবে মহিয়সী রজনী। ৩। উক্ত কদর যে রাত জেগে ইবাদত করে তারই। এর পূর্বে যে কদর তার ছিল না, রাত জেগে শবে কদর পাওয়ার পর আল্লাহর কাছে সে কদর লাভ হয় এবং তার কাছে তার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি হয়। আর তার জন্যই একে শবে কদর বলে। ৪। লাইলাতুল কদরের রাতে আমলেরও বড় মর্যাদাও মাহাত্ম রয়েছে। সে জন্যও তাকে লাইলাতুল কদর বলা হয়। ৫। ক্বদরের আর এক মানে হল সংকীর্ণতা; এ রাতে আসমান থেকে জমিনে এত বেশি সংখ্যক ফেরেশতা অবতরণ করেন যে, পৃথিবীতে তাদের জায়গা হয় না; বরং তাদের সমাবেশের জন্য পৃথিবী সংকীর্ণ হয়; তাই এ রাতকে শবেকদর বা সংকীর্ণতার রাত বলা হয়।