যেসব কারণে ইতিকাফ ভেঙে যায়

যেসব কারণে ইতিকাফ ভেঙে যায়
রমজানের শেষ দশকের গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো ইতিকাফ। এটি পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর রহমত, বরকত, মাগফেরাত ও নাজাত পাওয়া। ইতিকাফ আল্লাহর সাথে বান্দার নিবিড় সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ করে দেয়। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি মদিনায় হিজরত করে প্রতিবছরই ইতিকাফ করতেন। ইতিকাফে বসলে রোজাদার কোনো ধরনের কথা-বার্তা, লেনদেন, ব্যবসা-বানিজ্য, চাকরি-বাকরি কোনো কিছুতেই অংশ নিতে পারবে না।
চলুন জেনে নেওয়া যাক যেসব কারণে ইতিকাফ ভেঙে যায়-
১। সুন্নাত ইতিকাফকারীর জন্য মানবীয় ও শরয়ি বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনও কারণে মসজিদ থেকে বের হওয়ার অনুমতি নেই। বের হলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। সুতরাং ফরজ গোসল ছাড়া গরম ও গায়ের দুর্গন্ধের কারণে গোসল করার জন্য বের হওয়া জায়েজ নেই। হ্যাঁ, যদি অতীব প্রয়োজন হয় এবং মসজিদে গোসলের সুব্যবস্থা থাকে, তাহলে মসজিদেই গোসল করবে অথবা ভেজা গামছা দিয়ে শরীর মুছে ফেলবে। আর ইস্তেঞ্জা করতে গিয়ে অজু পরিমাণ স্বল্প সময়ের মধ্যে সাবান ইত্যাদি ছাড়া স্বাভাবিক গোসল করতেও কোনও অসুবিধা নেই।
২। জানাজা ও রোগীর সেবা ইত্যাদির জন্য মসজিদ থেকে বের হলেও ইতিকাফ ভেঙে যাবে।
৩। ইতিকাফ অবস্থায় মেসওয়াক অথবা ব্রাশ করার জন্য মসজিদের বাইরে যাওয়া যাবে না। গেলে ইতিকাফ ভেঙে যাবে। তবে অজু করার জন্য বের হলে তখন মেসওয়াকও করে নেওয়া যাবে।
৪। ফোনে কথা বলার জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়ার অনুমতি নেই।
৫। ইতিকাফের জন্য রোজা শর্ত। তাই কেউ যদি অসুস্থতার দরুন অপারগ হয়ে রোজা ভাঙতে হয়, তবে ইতিকাফও ভেঙে যাবে।
৭। অসুস্থতার কারণে নিরুপায় হয়ে ডাক্তারের কাছে গেলেও ইতিকাফ ভেঙে যাবে। তবে অপারগতার কারণে গুনাহগার হবে না।
৮। ইতিকাফে যেকোনো অপ্রয়োজনীয় কাজই মাকরুহ। যেমন- অনর্থক গল্প করা, মোবাইলে গেম খেলা, ফেসবুকে চ্যাট করা ইত্যাদি। ব্যবসায়ী মালামাল মসজিদে নিয়ে আসা মাকরুহ। যদিও একান্ত প্রয়োজনে বেচাকেনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ইতিকাফ অবস্থায় চুপ করে বসে থাকাও কোনো ইবাদত নয়। তাই ইবাদত মনে করে চুপ করে বসে থাকাও মাকরুহ। তবে এসব কারণে ইতিকাফ ভাঙবে না।