সাফা মারওয়ার মাঝে যাওয়া-আসা করাকে সাঈ বলে। সাফা থেকে মারওয়া পর্যন্ত এক চক্কর হয়, আবার মারওয়া থেকে সাফায় ফিরে এলে আরেক চক্কর। অনেকেই ভুল করে, সাফা থেকে মারওয়া আবার মারওয়া থেকে সাফায় পর্যন্ত, এক চক্কর হিসাব করে থাকে। অর্থাৎ সাফা মারওয়ার মাঝে ১৪ বার যাতায়াত করে ৭ চক্কর হিসাব করে থাকে, এটা মারাত্মক ভুল।
তাওয়াফ শেষ হলে ওমরা আদায়কারী সায়ী করার জন্য সাফা পাহাড়ের দিকে অগ্রসর হবে। সাফার কাছাকাছি হলে এই আয়াতটি পড়বে:
এরপর সাফা পাহাড়ে আরোহণ করে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে আল্লাহর প্রশংসা আদায় করবে ও তিনবার তাকবীর বলবে। এরপর দু'হাত তুলে আল্লাহর কাছে বেশী করে দোয়া করবে। তিনবার এই দোয়াটি পড়বে-
অনেক হজ্ব ও ওমরাকারীকে তাকবীর বলার সময় হাত তুলতে দেখা যায়। এটি একটি প্রচলিত ভুল।
এরপর সাফা থেকে নেমে স্বাভাবিকভাবে হেঁটে মারওয়ার দিকে রওয়ানা হবে। এ সময় যে কোন দোয়া করতে পারবে; নিজের জন্য, পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহর কল্যাণের জন্য দোয়া করবে। সবুজ দাগ পর্যন্ত পৌঁছলে প্রথম সবুজ দাগ থেকে দ্বিতীয় সবুজ দাগ পর্যন্ত পুরুষগণ দৌঁড়ে অতিক্রম করবেন। মহিলাগণ স্বাভাবিকভাবে চলবেন। এরপর মারওয়া পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে হেঁটে যাবে
•ওমরা পালনকারী মারওয়ায় পৌঁছার পর কেবলামুখী হয়ে সাফা পাহাড়ে যা যা করেছিলো তাই করবে, যে দোয়াগুলো সেখানে পড়েছিলো সেগুলো এখানেও পড়বে, দু'হাত তুলে কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে দোয়া করবে। তবে কুরআন শরীফের যে আয়াতটি সাফায় উঠার সময় পড়েছিলো সেটি মারওয়ায় উঠার সময় পড়বে না। এরপর নেমে সাফার দিকে যাবে। সবুজ দাগ পর্যন্ত পৌঁছলে প্রথম সবুর্গ দাগ থেকে দ্বিতীয় সবুজ দাগ পর্যন্ত পু- রুষগণ দৌঁড়ে অতিক্রম করবেন, আর মহিলাগণ স্বাভাবিকভাবে হেঁটে অতিক্রম করবেন। এরপর স্বাভাবিকভাবে হেঁটে সাফা পর্যন্ত যাবে। এভাবে সাত চক্কর পূর্ণ করবে। সাফা থেকে শুরু করে মারওয়া পর্যন্ত আসলে এক চক্কর, মারওয়া থেকে সাফা গেলে আরেক চক্কর। এভাবে সাত চক্কর। সুতরাং, সায়ী শুরু হবে সাফা থেকে, শেষ হবে মারওয়ায়।
•বার্ধক্য, অসুস্থতা অথবা স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যার কারণে হুইল চেয়ারে বসে সায়ী করতে
পারবে। এতে কোন সমস্যা নেই।
•মহিলাদের জন্য হায়েয (ঋতু) ও নেফাস (প্রসব পরবর্তী অপবিত্রতা) অবস্থায় সায়ী করা জায়েয।তবে এ অবস্থায় তাওয়াফ জায়েয নেই। কারণ, সাফা মারওয়া মসজিদে হারামের অন্তর্ভুক্ত নয়।
•সায়ী শেষে ওমরা আদায়কারী মাখার চুল মুন্ডন করবে অথবা ছোট করবে। মুন্ডন করাই উত্তম। তবে যদি হজ্ব তামাকু হয় এবং ওমরা ও হজ্বের মাঝে সময়ের ব্যবধান খুব কম হয়, তখন ওমরা শেষে চুল ছোট করবে আর হজ্ব শেষে মুন্ডন করবে। এটাই উত্তম। তবে চুল ছোট করার সময় পুরো মাথা থেকেই কাটতে হবে।
•মহিলাগণ মাখা মুন্ডন করবে না। বরং, তারা মাখার সমস্ত চুল একসাথে ধরে আগা থেকে
আঙ্গুলের মাথা পরিমান চুল কাটবে।
এভাবে ওমরার কাজসমূহ শেষ হয়ে যাবে এবং ইহরামের কারণে যে কাজগুলো ওমরাকারীর উপর নিষেধ ছিল সেগুলো তার জন্য বৈধ হয়ে যাবে।